IQNA

ইমাম হুসাইনের(আ.) আন্দোলনের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দিক

12:40 - October 19, 2017
সংবাদ: 2604105
পৃথিবীর কোন স্থানই নেইনাওয়া (কারবালা)-র ন্যায় সুন্দর ও অসুন্দরকে পাশাপাশি এত উত্তমরূপে প্রদর্শন করেনি। ঐতিহাসিক কোন ঘটনাই ইমাম হুসাইন (আ.)-এর আন্দোলনের মতো মানবতার মহান বাণী ধারণ করেনি। ‘তাফ’-এর মরুভূমিতে সেদিন ‘তাওহীদ’ দ্বিতীয়বারের মতো জন্মগ্রহণ করেছিল।

বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: আশুরার দিন ‘খোদাপ্রেম’ নতুনভাবে ব্যাখ্যাত হয়েছিল এবং কুরআন (এর শিক্ষা) নবজীবন লাভ করেছিল। কেন ফেরেশতারা হযরত আদম (আ.)-কে সিজদা করেছিল,দশই মুহররমেই তার রহস্য উন্মোচিত হয়েছিল। বস্তুত আশুরার দিন কারবালায় মহান আল্লাহর সকল সৌন্দর্যময় বৈশিষ্ট্য পূর্ণরূপে প্রতিফলিত হয়েছিল।

চরম তৃষ্ণার্ত অবস্থায় ফোরাতের কূলে আলীর সন্তান আব্বাস যখন ঘোড়াসহ পানিতে নেমে পানি পান না করেই মশক ভর্তি করে পানি থেকে উঠে এলেন, তাঁর এ কর্মের মাধ্যমে ভালোবাসা, আত্মসম্মানবোধ, মনুষ্যত্ব ও আত্মত্যাগের যে মহান শিক্ষার নমুনা পৃথিবীর বুকে রেখে গেলেন তা সত্যপিপাসুদের জন্য চিরন্তন এক সুপেয় পানির ঝরনা প্রবাহিত করেছে।

রক্তাক্ত কারবালার এ মহান বীর মিথ্যার ওপর সত্যের বিজয়ের নিশান উড়িয়েছিলেন। তিনি সুন্দরের চিরন্তনতা ও অসুন্দরের স্থায়িত্বহীনতার মহান সাক্ষী। কারবালায় ইমাম হুসাইন ও তাঁর ভাই আব্বাস এবং তাঁদের সঙ্গী-সাথিরা কারবালাকে খোদাপরিচিতি,মানবতা ও মানুষ গড়ার মহান এক শিক্ষালয়ে পরিণত করেছিলেন।

কোন শিক্ষালয়ই কারবালার শিক্ষালয়ের মতো উত্তম ও সফল শিক্ষার্থী তৈরি ও প্রশিক্ষিত করতে পারেনি। কারবালার ন্যায় কোন শিক্ষাকেন্দ্রেই এত বৈচিত্র্যময় শিক্ষাবিভাগ নেই। খোদাপরিচিত, খোদাপ্রেম, মর্যাদাকর বৈশিষ্ট্য,লক্ষ্যের পথে চূড়ান্ত দৃঢ়তা প্রদর্শন, ধৈর্য, সাহসিকতা, একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর দাসত্বসহ অসংখ্য বিভাগে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সফলতার শীর্ষে আরোহণ করেছেন।

এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুগ্ধপোষ্যশিশু, কিশোর, তরুণ, যুবক, মধ্যবয়সী, প্রবীণ, বৃদ্ধ, পুরুষ-নারী, স্বাধীন মানুষ ও দাস সকলেই শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন। তাঁদের সকলেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মহান শিক্ষক ইমাম হোসাইন ইবনে আলী থেকে শিক্ষা লাভ করেছেন। তাঁর ছাত্ররা কঠিনতম পরীক্ষায় সম্মানের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছেন যা তাঁদের অতুলনীয় যোগ্যতার প্রমাণ বহন করে।

শাহাদাতের ময়দানের এ অকুতোভয় সৈনিকরা খোদাপ্রেমে এতটা নিমজ্জিত ছিলেন যে,তাঁদের নেতার পাশে তাঁদের নাম চিরন্তনতা লাভ করেছে। কেননা,যে কেউ মহান আল্লাহর জন্য তার সত্তাকে একনিষ্ঠ করবে অবশ্যই সে স্থায়িত্ব ও অমরতা লাভ করবে। আশুরার ঘটনার প্রতিটি মুহূর্ত জ্ঞান,উন্নত নৈতিক চরিত্র ও মর্যাদাকর বৈশিষ্ট্যে পূর্ণ। কারবালার ভূমির প্রতিটি অংশ মহান আল্লাহর সামনে আত্মসমর্পণ ও মহান প্রভুর দাসত্বের স্বীকৃতির প্রমাণবাহী।
captcha