IQNA

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ আগুনে বাড়িঘর ছাই, ২০০-র বেশি মানুষ গৃহহীন

11:57 - May 29, 2018
সংবাদ: 2605864
আন্তর্জাকি ডেস্ক: ভারতের হরিয়ানার নুহ জেলায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ আগুনে বাড়িঘর পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ওই ঘটনায় পঞ্চাশেরও বেশি বাড়িঘর সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হওয়ায় প্রায় ৬০ টি পরিবারের মানুষজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।



বার্তা সংস্থা ইকনা: গতকাল (রোববার) বিকেলের ওই ঘটনায় কমপক্ষে দু’শ’র বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। ওইদিন বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ শরণার্থী শিবিরের রোজাদার মানুষজন যখন ইফতারি তৈরিতে ব্যস্ত তখন রোহিঙ্গাদের বসতিতে আগুন ধরে যায়।

দমকল বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ আগুন ধরার খবর পাওয়ার পরে ঘটনাস্থলে তিনটা দমকলের গাড়ি পাঠানো হয়। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে প্রচেষ্টা চালানোর পরে অবশেষে আগুন আয়ত্তে আসে। শর্টসার্কিটের ফলে ওই আগুন ধরে যাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হয়েছে।

নুহ থানার কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার বলেন, আগুনে কেউ মারা যায়নি বা আহত হয়নি। কিন্তু সমস্ত ঝুপড়ি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখনও পর্যন্ত কেউ মামলা করার জন্য আসেনি। এসব ঝুপড়িতে কমপক্ষে ২১৫ জন বাস করতেন।

রোববার সন্ধ্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকেদের কাছাকাছি একটি জায়গায় অস্থায়ী শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং আশেপাশের লোকজন তাদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে।

এখানকার আকবর নামে এক বাসিন্দা বলেন, আমরা একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়ে ঘর থেকে বাইরে এসে দেখি সমস্ত দিকে ধোঁয়ায় ভরে গেছে। প্লাস্টিক ও রবার পোড়ার গন্ধ আসছিল। এসময় একটি গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে গেলে আগুন চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে।

জাফরুল্লাহ নামে ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যক্তি বলেন, তাদের সমস্ত জিনিষপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ নথি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পরনের কাপড় ছাড়া তাদের আর কিছু অবশিষ্ট নেই। শরণার্থী শিবিরের বেশিরভাগ লোকেদের পরিচয়পত্র পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। যাদের পরিচয়পত্র নিজের পকেটে ছিল তাদেরই কেবল তা নষ্ট হতে পারেনি।

মেওয়াতের ডেপুটি কমিশনার অশোক শর্মা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছেন। হরিয়ানার নুহ এলাকায় ছয়টি শরণার্থী শিবিরে প্রায় ৩৬০ টি পরিবারের কমপক্ষে তেরোশ’ শরণার্থী বাস করেন। মুসলিম সম্প্রদায়ের স্থানীয় নেতারা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তাঁবু ও খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য আশেপাশের বাসিন্দাদের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। মাওলানা মুহাম্মদ খালিদ শিগগিরি এসব লোকেদের পুনর্বাসনের কথা বলেছেন।

এর আগে গতমাসে দিল্লির কালিন্দিকুঞ্জ এলাকায় রোহিঙ্গা বসতিতে আচমকা আগুন ধরে গেলে সেসময় কমপক্ষে আড়াইশ’ মানুষ গৃহহীন হয়েছিলেন।বিজেপি যুব মোর্চার নেতা মণীশ চান্দেলা সেসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার অ্যাকাউন্টে ওই ঘটনার কথা স্বীকার করে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে আগুন ধরানোর পিছনে তাদের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছিলেন। মজলিশ ই মুশাওয়ারাতের পক্ষ থেকে সেসময় পুলিশে এ ব্যাপারে অভিযোগও করা হয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ‘উদার আকাশ’ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘হরিয়ানায় রোহিঙ্গাদের ত্রাণ শিবিরে আগুন ধরে যাওয়ায় সেখানকার সমস্ত রোহিঙ্গা সর্বস্বান্ত হয়েছে। মানুষজন খোলা আকাশের নীচে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন। হরিয়ানা সরকার তাদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের থাকা ও খাওয়ার সুব্যবস্থা করুক। আগুনের পিছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কী না হরিয়ানা সরকার তার যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিক।’ পার্সটুডে

captcha