IQNA

‘আপনার কাছ থেকে ধর্ম শেখার দরকার নেই, আপনিতো ইসলাম হারিয়েছেন’

23:05 - August 02, 2018
সংবাদ: 2606356
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ‘আমাদের খুব তাড়াতাড়িই আরবী ভাষা শিখতে হবে, যাতে আমরা ধর্ম সম্পর্কে আরো ভালো করে বুঝতে পারি এবং আপনাকে বুঝিয়ে দিতে পারি।’ ‘আপনি আপনার ধর্ম হারিয়েছেন’।

 
বার্তা সংস্থা ইকনা: আবুধাবীর ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন যায়েদ কর্তৃক পূর্ব আফ্রিকায় একটি ইসলামিক কেন্দ্র নির্মাণ করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবে আহমেদ এসব কথা বলেন।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যে আমেরিকান-ইথিওপিয়ান মুসলিম কমিউনিটির সংগে মতবিনিময় কালে আবে আহমেদ যায়েদের (যাকে আবুধাবীর ডি-ফেক্টো নেতা হিসাবে গণ্য করা হয়) সাথে তার আলোচনা হওয়াকে পুনরায় স্মরণ করেন।

‘আমরা আপনাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতে পারব। আমরা আপনাকে শিক্ষা দিব।’, বিন যায়েদ আবে আহমেদের সাথে এক ব্যক্তিগত বৈঠক কালে আবি আহমেদকে উদ্দেশ্য করে এমনটি বলেন। এর প্রতিউত্তরে আহমেদ বলেন, ‘আপনার কাছ থেকে আমাদের ধর্ম শেখার দরকার নেই, আপনিতো ধর্ম হারিয়েই ফেলেছেন। আমাদের এখন যা দরকার তা হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব আরবী ভাষা শিখে নেয়া, যাতে আমরা ধর্ম সম্পর্কে আরো ভালো ভাবে বুঝতে পারি এবং আপনাকে বুঝিয়ে দিতে পারি ও ফিরিয়ে দিতে পারি।’

যখন যায়েদ জানতে চান কেন এমনটি বলছেন? আহমেদ প্রতিউত্তরে জানান যে, ইসলাম হচ্ছে শান্তির ধর্ম কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে যা হচ্ছে তা এর সাথে যায় না।

‘আপনারা ধর্ম হারিয়ে ফেলেছেন’-ক্রাউন প্রিন্সকে উদ্দেশ্য করে এমনটি বলেছিলেন বলে তিনি জানান।

‘আপনাদের চারপাশে যা শুরু হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে সেখানে সত্যিকারের ইসলাম নেই, এবং আপনারা কিভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হয়, কিভাবে ক্ষমা করতে হয় সে সম্পর্কে ভূলে গেছেন।’

আবি আহমেদ গত মঙ্গলবার ইরিত্রিয়ার রাষ্ট্রপতি ইসাইয়াস আফউয়েরকির সাথে আবুধাবী সফরের সময় সাবেক বিরোধী দুই গোষ্ঠী ইথিওপিয়া এবং ইরিত্রিয়ার সাথে এক শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর আবুধাবীর ক্রাউন প্রিন্স যায়েদের সাথে এক ব্যক্তিগত বৈঠকে মিলিত হন।

ইউএই এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে জানা যায় যে, সফররত দুই দেশের প্রধানকে যায়েদ ‘তাদের দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্যেগ নেয়া এবং সহযোগিতার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা ও ইউএই এর সাথে তাদের বন্ধন আরো দৃঢ় করার স্বীকৃত স্বরূপ’ ‘ওর্ডার অব যায়েদ’ নামক মেডেল দিয়ে সম্মান জানান।

আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, আবুধাবী, সৌদি আরব, কাতার বা কুয়েতের চাইতেও তার দেশে মুসলিম জনসংখ্যা ৪০ শতাংশ বেশী। ইথিওপিয়া হচ্ছে আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যা বহুল দেশ যেখানে প্রায় ১০৮ মিলিয়ন মানুষ বসবাস করে।

আহমেদের(৪২) পিতা ছিলেন একজন খ্রিস্টান এবং মাতা ছিলেন একজন মুসলিম। ক্ষমতা গ্রহণের পরেই রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেয়া, ইরিত্রিয়ার সাথে দুই দশক ধরে চলমান বিরোধের অবসান ঘটিয়ে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য তাকে সম্মান দেয়া হয়।

এপ্রিলে ক্ষমতা গ্রহণের পরে তিনি গত শুক্রবার প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে সফর করেন।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভাই প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সাথে সাক্ষাৎ করেন। শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করা প্রসঙ্গে পেন্স আহমেদের প্রশংসা করেন এই বলে যে, ‘একটি ঐতিহাসিক উদ্যোগ’। ‘মুনুষের অধিকার রক্ষা করা, ব্যবসায়ীক পরিস্থিতির উন্নয়ন করা এবং ইরিত্রিয়ার সাথে শান্তি চুক্তি করা’ ইত্যাদির জন্য পেন্স আহমেদের ভূয়সী প্রশংসা করেন বলে এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ জানায়। আরটিএনএন

captcha